নরেন্দ্রপুর নিয়ে দুকলম লিখে যাই। প্রথম নাম মনে আসছে নাড়ুর। নারায়ণ
মহারাজ, যোগানন্দ ভবনে থাকতেন। বিপাশা বসুর হাস্কিনেসের সাথে অমিতাভ
বচ্চনের গাম্ভীর্য মেলালে অমন গলা হয়। গরমকালে ফ্যান চালালে কেন ঘাম
শুকিয়ে যায়? ফিজিক্সের একটা কমন ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু নাড়ুর একটা
বায়োলজিকাল বক্তব্য ছিল। পাখার হাওয়া ত্বকের উপর প্রেশার দিয়ে ঘামটা
ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। আরো কিছু মণি মুক্তো ছিল, পরে বলা যাবে।
আর একজন ছিলেন সুনীতিদা, বাংলা পড়াতেন। আজ অবধি অমন ভালো হাতের লেখা
দেখিনি। তেমনি মারতেন। স্টাডি হল বলে একটা জায়গা ছিল প্রত্যেকটা
হোস্টেলে, সেখানে দল বেঁধে পড়াশুনো করার কথা সকাল ৬টা থেকে ৮টা অব্দি,
কিন্তু সবাই ঘুমোতো। ন্যাচারাল ব্যাপার। সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে
মানুষ সন্ন্যাসী বা পারভার্ট হয়ে যায়। এই স্টাডি হল গুলোতে একজন স্যার
আসতেন, যাঁদের কাজ ছিল প্রাইমারিলি ছেলেপুলে কে ঘুম থেকে তোলা। বেশীর
ভাগ স্যারই দাঁড় করিয়ে দিতেন, এবং বছর তিনেকের মধ্যে দেখলুম সকলেই
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমনোর ব্যাপারটা বেশ অভ্যাস করে ফেলেছে। সেই থেকে আমি
ডারউইন এর তত্বে বিশ্বাসী হয়ে উঠি, এবং প্রেয়ার হলে ঘুমোনো অভ্যাস করে
ফেলি। সুনীতিদা শুধু দাঁড় করানোয় বিশ্বাস রাখতেন না। ডেস্কে মাথা রেখে
শান্তিতে ঘুমোচ্ছে, এমন জোয়ান মদ্দ ছেলেকে, বললে বিশ্বাস করবেন না, জুলপি
ধরে, জাস্ট জুলপি ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে দিতেন। তারপরে পড়াশুনো হোক বা না
হোক, যন্ত্রণার চোটে ঘুমোনো আর সম্ভব হতোনা।
এই সুনীতিদা "স" বর্ণটা অদ্ভুত ভাবে উচ্চারণ করতেন। ব্যাপারটা ছিল অনেকটা
স,জ আর ঝ এর মিশ্রণ। আমরা আড়ালে বলতুম জঝ্যানীতি। খুবই গম্ভীর প্রকৃতির
লোক, চুপচাপ থাকেন। একদিন স্টাডি হল বেশ শান্ত, সুনীতিদার পাশের ডেস্কে
বসে একটি ছেলে উদাস হয়ে সামনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল। হঠাত দেখে
দেওয়াল বেয়ে একটা টিকটিকি উঠছে। ছেলেটি চটি খুলে মোক্ষম টিপ করতে যাবে,
সুনীতিদা চেয়ার থেকে প্রায় ধুমকেতুর স্পীডে লাফিয়ে উঠলেন, "খবরদার,
স্ট্যাকটিকির গায়ে কেউ হাআআত দেবেনা"। এই অলৌকিক ঘটনার আজ অব্দি কোনো
কারণই খুঁজে পাইনি।
আলাভোলা টিকটিকি প্রেমী স্যারেরা ছিলেন, ভালো মন্দ বিজ্ঞানী অজ্ঞানী
গেরুয়া সাদা মহারাজেরা ছিলেন, সন্ধের ঘুম জড়িয়ে আসা চোখে শাঁখের আওয়াজ
ছিল, পাশের মোল্লাপাড়া থেকে ভেসে আসা অপার্থিব চিত্কার ছিল, অদ্ভুত নিয়ম
ছিল, সেই নিয়ম ভাঙ্গার আনন্দ ছিল, সব মিলিয়ে নরেন্দ্রপুর বড় মায়াময় ছিল।
পিছন ফিরে দেখলে রূপকথা মনে হয়।
মহারাজ, যোগানন্দ ভবনে থাকতেন। বিপাশা বসুর হাস্কিনেসের সাথে অমিতাভ
বচ্চনের গাম্ভীর্য মেলালে অমন গলা হয়। গরমকালে ফ্যান চালালে কেন ঘাম
শুকিয়ে যায়? ফিজিক্সের একটা কমন ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু নাড়ুর একটা
বায়োলজিকাল বক্তব্য ছিল। পাখার হাওয়া ত্বকের উপর প্রেশার দিয়ে ঘামটা
ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। আরো কিছু মণি মুক্তো ছিল, পরে বলা যাবে।
আর একজন ছিলেন সুনীতিদা, বাংলা পড়াতেন। আজ অবধি অমন ভালো হাতের লেখা
দেখিনি। তেমনি মারতেন। স্টাডি হল বলে একটা জায়গা ছিল প্রত্যেকটা
হোস্টেলে, সেখানে দল বেঁধে পড়াশুনো করার কথা সকাল ৬টা থেকে ৮টা অব্দি,
কিন্তু সবাই ঘুমোতো। ন্যাচারাল ব্যাপার। সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে
মানুষ সন্ন্যাসী বা পারভার্ট হয়ে যায়। এই স্টাডি হল গুলোতে একজন স্যার
আসতেন, যাঁদের কাজ ছিল প্রাইমারিলি ছেলেপুলে কে ঘুম থেকে তোলা। বেশীর
ভাগ স্যারই দাঁড় করিয়ে দিতেন, এবং বছর তিনেকের মধ্যে দেখলুম সকলেই
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমনোর ব্যাপারটা বেশ অভ্যাস করে ফেলেছে। সেই থেকে আমি
ডারউইন এর তত্বে বিশ্বাসী হয়ে উঠি, এবং প্রেয়ার হলে ঘুমোনো অভ্যাস করে
ফেলি। সুনীতিদা শুধু দাঁড় করানোয় বিশ্বাস রাখতেন না। ডেস্কে মাথা রেখে
শান্তিতে ঘুমোচ্ছে, এমন জোয়ান মদ্দ ছেলেকে, বললে বিশ্বাস করবেন না, জুলপি
ধরে, জাস্ট জুলপি ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে দিতেন। তারপরে পড়াশুনো হোক বা না
হোক, যন্ত্রণার চোটে ঘুমোনো আর সম্ভব হতোনা।
এই সুনীতিদা "স" বর্ণটা অদ্ভুত ভাবে উচ্চারণ করতেন। ব্যাপারটা ছিল অনেকটা
স,জ আর ঝ এর মিশ্রণ। আমরা আড়ালে বলতুম জঝ্যানীতি। খুবই গম্ভীর প্রকৃতির
লোক, চুপচাপ থাকেন। একদিন স্টাডি হল বেশ শান্ত, সুনীতিদার পাশের ডেস্কে
বসে একটি ছেলে উদাস হয়ে সামনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল। হঠাত দেখে
দেওয়াল বেয়ে একটা টিকটিকি উঠছে। ছেলেটি চটি খুলে মোক্ষম টিপ করতে যাবে,
সুনীতিদা চেয়ার থেকে প্রায় ধুমকেতুর স্পীডে লাফিয়ে উঠলেন, "খবরদার,
স্ট্যাকটিকির গায়ে কেউ হাআআত দেবেনা"। এই অলৌকিক ঘটনার আজ অব্দি কোনো
কারণই খুঁজে পাইনি।
আলাভোলা টিকটিকি প্রেমী স্যারেরা ছিলেন, ভালো মন্দ বিজ্ঞানী অজ্ঞানী
গেরুয়া সাদা মহারাজেরা ছিলেন, সন্ধের ঘুম জড়িয়ে আসা চোখে শাঁখের আওয়াজ
ছিল, পাশের মোল্লাপাড়া থেকে ভেসে আসা অপার্থিব চিত্কার ছিল, অদ্ভুত নিয়ম
ছিল, সেই নিয়ম ভাঙ্গার আনন্দ ছিল, সব মিলিয়ে নরেন্দ্রপুর বড় মায়াময় ছিল।
পিছন ফিরে দেখলে রূপকথা মনে হয়।
No comments:
Post a Comment