নিশিরাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, ঘুম এসে গেছে গেছে, এইসময় হঠাত নরেন্দ্রপুর ভেসে উঠলো। প্রায় অলৌকিক। এবং যথারীতি, মনটা ভয়াবহ উদাস হয়ে গেল। অভেদানন্দ ভবনে প্রেয়ার হলের একটা জানালা দিয়ে নিচের ডাইনিং হলটা দেখা যেত, পুরোটা নয়, বাসন ধোয়ার জায়গাটা, আর তার পাশের একটা গাছ, সেইখানে প্রথম শরত এর রং লাগত। তারপরে তো মহালয়া আসবে, প্রেয়ার হলে বসে প্রায় ঢুলতে ঢুলতে আমরা গাইব অয়ি গিরি নন্দিনী, শুধু ওই অয়ি সুমনঃ সুমনঃ এর জায়গাটায় এসে সক্কলের ঘুম ভেঙ্গে যাবে আর এক অপূর্ব ব্রহ্মনাদ হোস্টেলের ছোট্ট ঘর, ইস্কুল বিল্ডিং, প্রায় কারাগার এর মত নির্মম স্টাডি হলের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে যাবে আদিগন্ত চরাচরে। পাশের বাগানে কামাতুর গাই হরিণীরা ঘুমিয়ে রয়েছে তখনো; মধ্যযামে ধূপের গন্ধ ছেয়ে ছিল নিস্তব্ধ বাঁশঝাড়ে, সেও তখনো তন্দ্রায়। শুধু আমাদের উপাসনা ঘর ঘিরে ধরছে নরম রোদ্দুর আর আমরা গেয়ে উঠছি "ঝণঝণ ঝিঞ্জিমি ঝিঙ্কৃতনূপুর সিঞ্জিত মোহিত ভূতপতে" । সেসকল অন্য এক মায়াময় পৃথিবীর গল্প।
Sunday, March 4, 2018
Thursday, March 1, 2018
করণ অর্জুন রিভিউ
ব্যাপারটা হচ্ছে যে সবকিছুই ফিরে দেখার প্রয়োজন আছে। বাজে ইজ আ স্টেট অফ মাইন্ড। আমি যেমন সেদিন প্রায় ঘন্টা তিনেক বসে করণ অর্জুন দেখলাম। দ্য বেস্ট থ্রি আওয়ার্স অফ মাই লাইফ। প্রথমতঃ একটি টেকিলার বোতল নিয়ে বসুন। যতবার রাখী বলবেন মেরে করণ অর্জুন আয়েঙ্গে, একটা ছোট শট মারবেন। এতে সুবিধে হচ্ছে যে মোটামুটি প্রথম এক ঘন্টার মধ্যে আপনি মাতাল হয়ে যাবেন। চিন্তা নেই, তাপ্পরে আর মদ খেতে হবেনা। খাবেনই বা কি করে, ততক্ষণে তো করণ অর্জুন ফিরেই এসেছে।
যাগ্গে, এ সিনেমার প্রাণ হলো গান। এইটা মনে রাখবেন। প্রথমে কাজলের ঐ গানটা। জাতি হুম মায়, জলদি হ্যায় কেয়া। এই গানটার মতো অনবদ্য ভিসুয়ালইজেশন আজ অবধি হিন্দি সিনেমায় হয়নি। খড়ের উপরে অপ্সরা বিভঙ্গে কাজল নাচছে, শাহরুখ গাইহরিণ (কেন বাপু, সব সময় হরিণী কেন, হরিণের কি কাম থাকতে নাই?) এর মতো পাগল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ক্যামেরা জুম করে ঘোড়াদের উপরে। তারা, স্বভাবতই, কিংকর্তব্যবিমূঢ় (দর্শকও তাই অবশ্য)। এইরকম ভাবে ঘোরতর এক বুর্জোয়া সমাজে প্রলেতারিয়েতের জীবন যন্ত্রণা ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘোড়া এখানে গতি নয়, শোষণের মোটিফ। সে আবার শেষের দিকে আসবে, পরে বলছি। একটি অসাধারণ সিন আসে যেখানে কাজল শাহরুখ এর গেঞ্জির মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে নাচছেন। সেই সময় ক্যামেরা ক্ষণিকের জন্যে জুম করে ব্যাথাতুর শাহরুখের মুখে, লিপ রিডিং জানলে আপনি নিশ্চিত পড়তে পারতেন তিনি বলছেন হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে।
অতঃপর মমতা কুলকার্নির সেই অবিস্মরণীয় নাচ, রানাজী মাফ করনা গলতি মারে সে হো গৈ। গানের মাঝখানে সেই সলাজ বিনম্র উচ্চারণ, "ভুল হুই মুঝসে ক্যায়সে আচম্ভা, বহনই ভি থা পিয়া জিতনা লম্বা"। এইখানে সরল দর্শকের চোখ এড়িয়ে যায় যে মমতাদেবী হাত দিয়ে পরিষ্কার ইঙ্গিত করেন উনি লম্বা বলতে কি বলতে চেয়েছেন। ভারতীয় পৌরুষের এতো সোচ্চার উচ্চারণ আর কখনো পেয়েছেন? এর পরে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কাহিনী পেরিয়ে আমরা প্রবেশ করি সিনেমার মূল অংশ তথা ক্যালাকেলিতে। এইখানে আবার, ফিরে আসে প্রলেতারিয়েত তথা ঘোড়া। সলমন খান প্রথমে একটা ঘোড়াকে সপাটে লাথি মারেন, মানে ঘোড়ার উপরে একটি লোক বসে ছিল, তাকে মারলেও হতো, কিন্তু উনি শিকারী মানুষ। এতেও শান্ত না হয়ে পরের সিনে উনি একটি ঘোড়াকে লাগাম টেনে থামান, তার পরে, তার মুখে একটি নিদারুণ ঘুষি। "ফুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে তুমি ক্রমে নরমুণ্ড লোভী হয়ে ওঠো" ( কৃষ্ণসার হরিণ ইঃ)।
ইন সামারি, এ ছবিতে শেখার অনেক কিছুই আছে। এ আসলে এক অমোঘ শ্রেণী সংগ্রামের গল্প যাতে প্রচুর উলুখাগড়া তথা ঘোড়ার প্রাণ যায়। পুরোটা লিখে উঠতে পারলুমনা। ঘুম্পায়। আপনারা অবশ্যই দেখে নেবেন।
পুনশ্চ: পুরো ছবি জুড়ে জনি লিভার কি এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলেন। ওটা আপনি প্রথমে ভাববেন কমিক রিলিফ, পরে দেখবেন, ওটা সত্যিই কমিক রিলিফ, কারণ ঐ মুহূর্ত গুলিতেই আপনি সর্বব্যাপী এক কমিকের থেকে রিলিফ পাচ্ছেন। এইভাবে দর্শকের ন্যারেটিভ ও পার্সপেক্টিভ ঘেঁটে দেওয়া হয়, যাকে বোদ্ধারা পরবর্তীকালে যথাক্রমে তারকোভস্কি ও ডয়েটভস্কির মিলিত প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যাগ্গে, এ সিনেমার প্রাণ হলো গান। এইটা মনে রাখবেন। প্রথমে কাজলের ঐ গানটা। জাতি হুম মায়, জলদি হ্যায় কেয়া। এই গানটার মতো অনবদ্য ভিসুয়ালইজেশন আজ অবধি হিন্দি সিনেমায় হয়নি। খড়ের উপরে অপ্সরা বিভঙ্গে কাজল নাচছে, শাহরুখ গাইহরিণ (কেন বাপু, সব সময় হরিণী কেন, হরিণের কি কাম থাকতে নাই?) এর মতো পাগল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ক্যামেরা জুম করে ঘোড়াদের উপরে। তারা, স্বভাবতই, কিংকর্তব্যবিমূঢ় (দর্শকও তাই অবশ্য)। এইরকম ভাবে ঘোরতর এক বুর্জোয়া সমাজে প্রলেতারিয়েতের জীবন যন্ত্রণা ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘোড়া এখানে গতি নয়, শোষণের মোটিফ। সে আবার শেষের দিকে আসবে, পরে বলছি। একটি অসাধারণ সিন আসে যেখানে কাজল শাহরুখ এর গেঞ্জির মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে নাচছেন। সেই সময় ক্যামেরা ক্ষণিকের জন্যে জুম করে ব্যাথাতুর শাহরুখের মুখে, লিপ রিডিং জানলে আপনি নিশ্চিত পড়তে পারতেন তিনি বলছেন হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে।
অতঃপর মমতা কুলকার্নির সেই অবিস্মরণীয় নাচ, রানাজী মাফ করনা গলতি মারে সে হো গৈ। গানের মাঝখানে সেই সলাজ বিনম্র উচ্চারণ, "ভুল হুই মুঝসে ক্যায়সে আচম্ভা, বহনই ভি থা পিয়া জিতনা লম্বা"। এইখানে সরল দর্শকের চোখ এড়িয়ে যায় যে মমতাদেবী হাত দিয়ে পরিষ্কার ইঙ্গিত করেন উনি লম্বা বলতে কি বলতে চেয়েছেন। ভারতীয় পৌরুষের এতো সোচ্চার উচ্চারণ আর কখনো পেয়েছেন? এর পরে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কাহিনী পেরিয়ে আমরা প্রবেশ করি সিনেমার মূল অংশ তথা ক্যালাকেলিতে। এইখানে আবার, ফিরে আসে প্রলেতারিয়েত তথা ঘোড়া। সলমন খান প্রথমে একটা ঘোড়াকে সপাটে লাথি মারেন, মানে ঘোড়ার উপরে একটি লোক বসে ছিল, তাকে মারলেও হতো, কিন্তু উনি শিকারী মানুষ। এতেও শান্ত না হয়ে পরের সিনে উনি একটি ঘোড়াকে লাগাম টেনে থামান, তার পরে, তার মুখে একটি নিদারুণ ঘুষি। "ফুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে তুমি ক্রমে নরমুণ্ড লোভী হয়ে ওঠো" ( কৃষ্ণসার হরিণ ইঃ)।
ইন সামারি, এ ছবিতে শেখার অনেক কিছুই আছে। এ আসলে এক অমোঘ শ্রেণী সংগ্রামের গল্প যাতে প্রচুর উলুখাগড়া তথা ঘোড়ার প্রাণ যায়। পুরোটা লিখে উঠতে পারলুমনা। ঘুম্পায়। আপনারা অবশ্যই দেখে নেবেন।
পুনশ্চ: পুরো ছবি জুড়ে জনি লিভার কি এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলেন। ওটা আপনি প্রথমে ভাববেন কমিক রিলিফ, পরে দেখবেন, ওটা সত্যিই কমিক রিলিফ, কারণ ঐ মুহূর্ত গুলিতেই আপনি সর্বব্যাপী এক কমিকের থেকে রিলিফ পাচ্ছেন। এইভাবে দর্শকের ন্যারেটিভ ও পার্সপেক্টিভ ঘেঁটে দেওয়া হয়, যাকে বোদ্ধারা পরবর্তীকালে যথাক্রমে তারকোভস্কি ও ডয়েটভস্কির মিলিত প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
Subscribe to:
Posts (Atom)