এক সপ্তাহ হয়ে গেলো। অন্য দেশে চলে এসেছি, দূরত্ব দিয়ে ব্যবধান সৃষ্টি করি যতটা সম্ভব। বাড়িতে কিংবা শ্রিয়াকে ফোন করি, সবাই ভালো আছো তো? এরপরে ধীরে ধীরে জীবনে ব্যস্ত হয়ে যাবো। সবাই হয়ে যায়, অফিস, বৌ, বাচ্ছা, সংসার। শৈশব কৈশোরের সবটুকু জুড়ে ছিল দাদু, কলেজের শুরুতে চলে গেলো, ধীরে ধীরে ভুলেও গেলাম। দিদার মৃত্যু ছিল বড়োই আকস্মিক, চতুর্থীর দিনে সল্টলেক থেকে বারাসাতে ফিরছি, চারতলা থেকে হাত নাড়লো, তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস। ষষ্ঠীর দিন সকাল বেলায় শুনলাম সব শেষ। ভুলে গেছি। এক ডিসেম্বরে দাদাভাইকে দেখে ফিরলাম আমেরিকায়, মার্চ কিংবা এপ্রিল মাসে চলে গেলো। ঠাম্মা ভুগলো বহুদিন, কতদিন শয্যাশায়ী, রেজিস্ট্রি করে ফিরলাম, শুনলাম চলে গেছে। বড়পিসিমণির পুরো ফ্যামিলিটা এক এক করে চলে গেলো, ছোটবেলায় সন্তুদাকে দেখে গল্পের বই পড়তে শেখা, আমার থেকে কতই বা বড়ো হবে, সেও চলে গেলো কত কম বয়সে। বাপ্পাকাকুকে দেখেছিলাম বিয়ের সময়ে, বললাম শরীরটা একটু খারাপ দেখাচ্ছে, ডাক্তার দেখিয়ো। চলে গেলো কোভিডের মাঝে। সবই ভুলে যাই, সময় ভুলিয়ে দেয় ধীরে ধীরে। সংহিতাদির মৃত্যুও ভুলে যাবো হয়তো, স্টেট কলেজের পাঁচটা বছর আর তার পরের পাঁচ, এইতো চেনাশোনা। কতদিনই বা মনে থাকবে। মাঝে মাঝে পাতা উল্টিয়ে ছবি টবি দেখবো। কিংবা হোয়াটসএপ খুললে দেখবো লেখা আছে উফ আর কত কাজ করবি, পম আসছে, রাতুল, সুপর্ণ, পান্ডা এসে পড়লো, একটু চা খেয়ে যা। ওটুকুই জ্বালাবে সারা জীবন।
আমার দুঃখের দিন তথাগত
আমার সুখের দিন ভাসমান!
এমন বৃষ্টির দিন পথে পথে
আমার মৃত্যুর দিন মনে পড়ে।
আবার সুখের মাঠ ভরা জল
আবার দুঃখের ধান ভরে যায়!
এমন বৃষ্টির দিন মনে পড়ে
আমার জন্মের কোন শেষ নেই।
No comments:
Post a Comment