রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আমার পড়া সেরা বক্তব্য নবারুণ ভটচাজের থেকে পাওয়া। "জাহাজ ক্যাপ্টেন তুমি, বাকি সব মাঝি আর মাল্লা/ সকলে জাঙ্গিয়া পরে, তুমি একা পরে আলখাল্লা"। ব্যাপক হারে রবিনন্দন দেখলে এই লাইনদুটোই প্রথম মনে পড়ে। হঠাৎ ইন্টারনেটে আনন্দবাজার খুলে খেয়াল করলাম, চব্বিশে শ্রাবণ, মানে বাইশে শ্রাবণ পেরিয়ে গেছে দুদিন হলো। তেমন হাহাকার দেখিনি এবারে ফেসবুকে, প্রায় অমোঘ "কবি কে আমরা কি ভুলে গেলাম" ধারায় আনন্দবাজারীয় রোদনও চোখে পড়েনি। শতবর্ষ পার কি হবে গুরুদেব?
কিভাবে একটা গান প্রিয় হয়? আমার ধারণা একটা গান শোনার সাথে মানুষ কখনো একটা স্মৃতির এসোসিয়েশন করে নেয়, আর সারা জীবন সেই কুসুমে ওম দিয়ে যায়। যে গানের সাথে স্মৃতির যোগ নেই, সেই গান প্রিয় নয়। হতে পারেনা। যতই খিল্লি করিনা কেন, আমার জীবনে অন্ততঃ এইখানেই গুরুদেব বাকি সব্বাইকে দশ গোল দিয়ে গেছেন। অজস্র ভালোলাগা, ভালোবাসা, কান্না ও অভিমানের স্মৃতি জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রসঙ্গীত ঘিরে। প্রকৃত প্রস্তাবে এই স্মৃতিগুলিই সব থেকে গোপন, সব চেয়ে ব্যক্তিগত।
স্মৃতি ঋতুমতী নদীর মতো বহতা, সুতরাং খুব সামলিয়ে এক দিনের কথাই বলি। যেদিন বিক্রমের সঙ্গে পরিচয় হলো। বাড়িতে অজস্র ক্যাসেট ছিল সাগর সেন, সুবিনয় রায় এবং দেবব্রত বিশ্বাসের। স্বল্প কণিকা এবং কিছু সুচিত্রা মিত্র, মধ্যবিত্ত বাড়িতে যেরকম হয়। তখন আমেরিকায় এসেছি সবে সবে, বন্ধু বান্ধব জোটেনি তেমন। কোনো একটা কারণে অসম্ভব মন খারাপ। একটা লম্বা করিডোর এ খুব শাদা আলোর মধ্যে বসে বসে অন্ধকার খুঁজছি। ডিপ্রেসড হলে সোশ্যাল হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় দেখেছি, সুতরাং পাগলের মতো ফেসবুক রিফ্রেশ করছি, এমন কিছু পাচ্ছিনা যাতে এক লহমার শান্তি পাই। কেউ একটা হঠাৎ শেয়ার করেছে দেখলাম একটা ইউটিউব ভিডিও, অচেনা কারো গলায় গাওয়া "আরো আঘাত সইবে আমার, সইবে আমারও"। গানটা আগে শুনিনি, হঠাৎ কি মনে করে ক্লিক করলাম।
বহুদিন হয়ে গেলো তো, খুব স্পষ্ট ভাবে আমার কিছু মনে নেই, এবং থাকলেই হয়তো অসঙ্গত হতো। শুধু মনে আছে খোলা গলায় বিক্রমের গান আর মাঝে মাঝে তানপুরার মৃদু ঝংকার। লাগে না গো কেবল যেন কোমল করুণা, মৃদু সুরের খেলায় এ প্রাণ ব্যর্থ কোরো না। আগে পড়েছি তো কতবার, গান হয় হৃদয় নিংড়ানো। পরিচয় সেই প্রথম। সেই প্রথম জানা যে আকুতি হতে পারে এতো বলিষ্ঠ। জ্বলে উঠুক সকল হুতাশ,গর্জি উঠুক সকল বাতাস। বেদনা উন্মোচন করে জেগে ওঠেন পুরুষোত্তম। পুরো গানটা খেয়াল করলে দেখা যায়, এটা একটা জার্নি। বেদনা থেকে মুক্তির জার্নি। অন্ধকার থেকে আলোতে যাওয়ার জার্নি। আঘাত থেকে পূর্ণতায় যাওয়ার জার্নি। তমসো মা জ্যোতির্গময়। মৃত্যোর্মামৃতং গময়। ঝর ঝর করে কাঁদছি একা বসে, পাশ দিয়ে লোকজন চলে যাচ্ছে অবাক দৃষ্টি দিয়ে। এটুকুই মনে আছে শুধু। আর মনে আছে প্রথম আলাপ। বিক্রম সিংহের গলায় রবি ঠাকুর।
মানব জীবন সতত সংক্ষুব্ধ। তবু ঊষালগ্নে কিছু কিছু মুহূর্তের জন্ম হয়। এই মুহূর্তেরা সূর্যের মতো শাশ্বত, পতিতপাবনী গঙ্গার মত পুণ্যতোয়া ও নিকোনো কুয়োর মত গহীন। এই মুহূর্ত গুলোর জন্যেই মানুষের মতো সচেষ্ট বেঁচে থাকা, অমরত্ব তাচ্ছিল্য করা। কিছু কিছু উচ্চারণ আমাদের সেই সব মুহূর্তের কাছে নিয়ে যায়। সেই উচ্চারণই ঈশ্বর, সৃষ্টির আদি নাদ। প্রণাম গুরুদেব, এরকম অজস্র উচ্চারণের সাথে আমাদের এই তুচ্ছ জীবনকে জুড়ে দেওয়ার জন্যে।
বিক্রম সিংহের নিজস্ব জার্নি বহুদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে। অসম্ভব প্রতিভাবান এই যুবক ত্রিশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মোটর বাইক একসিডেন্ট এ মারা যান। বাংলা গানের কি ক্ষতি ইত্যাদি বক্তব্য দেওয়ার কোয়ালিফিকেশন আমার নেই। ব্যক্তিগত ক্ষতি অপূরণীয়।
আমায় অনেক দিয়েছ নাথ,
আমার বাসনা তবু পুরিল না--
গভীর প্রাণের তৃষা মিটিল না, মিটিল না ॥
পুনশ্চ :
অনেক দিয়েছ নাথ: https://www.youtube.com/watch?v=C_p1HvNRSYg
আরো আঘাত সইবে আমার, সইবে আমারও : https://www.youtube.com/watch?v=DJ63veAevII
Thursday, August 9, 2018
Sunday, March 4, 2018
নরেন্দ্রপুর ৩
নিশিরাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, ঘুম এসে গেছে গেছে, এইসময় হঠাত নরেন্দ্রপুর ভেসে উঠলো। প্রায় অলৌকিক। এবং যথারীতি, মনটা ভয়াবহ উদাস হয়ে গেল। অভেদানন্দ ভবনে প্রেয়ার হলের একটা জানালা দিয়ে নিচের ডাইনিং হলটা দেখা যেত, পুরোটা নয়, বাসন ধোয়ার জায়গাটা, আর তার পাশের একটা গাছ, সেইখানে প্রথম শরত এর রং লাগত। তারপরে তো মহালয়া আসবে, প্রেয়ার হলে বসে প্রায় ঢুলতে ঢুলতে আমরা গাইব অয়ি গিরি নন্দিনী, শুধু ওই অয়ি সুমনঃ সুমনঃ এর জায়গাটায় এসে সক্কলের ঘুম ভেঙ্গে যাবে আর এক অপূর্ব ব্রহ্মনাদ হোস্টেলের ছোট্ট ঘর, ইস্কুল বিল্ডিং, প্রায় কারাগার এর মত নির্মম স্টাডি হলের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে যাবে আদিগন্ত চরাচরে। পাশের বাগানে কামাতুর গাই হরিণীরা ঘুমিয়ে রয়েছে তখনো; মধ্যযামে ধূপের গন্ধ ছেয়ে ছিল নিস্তব্ধ বাঁশঝাড়ে, সেও তখনো তন্দ্রায়। শুধু আমাদের উপাসনা ঘর ঘিরে ধরছে নরম রোদ্দুর আর আমরা গেয়ে উঠছি "ঝণঝণ ঝিঞ্জিমি ঝিঙ্কৃতনূপুর সিঞ্জিত মোহিত ভূতপতে" । সেসকল অন্য এক মায়াময় পৃথিবীর গল্প।
Thursday, March 1, 2018
করণ অর্জুন রিভিউ
ব্যাপারটা হচ্ছে যে সবকিছুই ফিরে দেখার প্রয়োজন আছে। বাজে ইজ আ স্টেট অফ মাইন্ড। আমি যেমন সেদিন প্রায় ঘন্টা তিনেক বসে করণ অর্জুন দেখলাম। দ্য বেস্ট থ্রি আওয়ার্স অফ মাই লাইফ। প্রথমতঃ একটি টেকিলার বোতল নিয়ে বসুন। যতবার রাখী বলবেন মেরে করণ অর্জুন আয়েঙ্গে, একটা ছোট শট মারবেন। এতে সুবিধে হচ্ছে যে মোটামুটি প্রথম এক ঘন্টার মধ্যে আপনি মাতাল হয়ে যাবেন। চিন্তা নেই, তাপ্পরে আর মদ খেতে হবেনা। খাবেনই বা কি করে, ততক্ষণে তো করণ অর্জুন ফিরেই এসেছে।
যাগ্গে, এ সিনেমার প্রাণ হলো গান। এইটা মনে রাখবেন। প্রথমে কাজলের ঐ গানটা। জাতি হুম মায়, জলদি হ্যায় কেয়া। এই গানটার মতো অনবদ্য ভিসুয়ালইজেশন আজ অবধি হিন্দি সিনেমায় হয়নি। খড়ের উপরে অপ্সরা বিভঙ্গে কাজল নাচছে, শাহরুখ গাইহরিণ (কেন বাপু, সব সময় হরিণী কেন, হরিণের কি কাম থাকতে নাই?) এর মতো পাগল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ক্যামেরা জুম করে ঘোড়াদের উপরে। তারা, স্বভাবতই, কিংকর্তব্যবিমূঢ় (দর্শকও তাই অবশ্য)। এইরকম ভাবে ঘোরতর এক বুর্জোয়া সমাজে প্রলেতারিয়েতের জীবন যন্ত্রণা ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘোড়া এখানে গতি নয়, শোষণের মোটিফ। সে আবার শেষের দিকে আসবে, পরে বলছি। একটি অসাধারণ সিন আসে যেখানে কাজল শাহরুখ এর গেঞ্জির মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে নাচছেন। সেই সময় ক্যামেরা ক্ষণিকের জন্যে জুম করে ব্যাথাতুর শাহরুখের মুখে, লিপ রিডিং জানলে আপনি নিশ্চিত পড়তে পারতেন তিনি বলছেন হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে।
অতঃপর মমতা কুলকার্নির সেই অবিস্মরণীয় নাচ, রানাজী মাফ করনা গলতি মারে সে হো গৈ। গানের মাঝখানে সেই সলাজ বিনম্র উচ্চারণ, "ভুল হুই মুঝসে ক্যায়সে আচম্ভা, বহনই ভি থা পিয়া জিতনা লম্বা"। এইখানে সরল দর্শকের চোখ এড়িয়ে যায় যে মমতাদেবী হাত দিয়ে পরিষ্কার ইঙ্গিত করেন উনি লম্বা বলতে কি বলতে চেয়েছেন। ভারতীয় পৌরুষের এতো সোচ্চার উচ্চারণ আর কখনো পেয়েছেন? এর পরে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কাহিনী পেরিয়ে আমরা প্রবেশ করি সিনেমার মূল অংশ তথা ক্যালাকেলিতে। এইখানে আবার, ফিরে আসে প্রলেতারিয়েত তথা ঘোড়া। সলমন খান প্রথমে একটা ঘোড়াকে সপাটে লাথি মারেন, মানে ঘোড়ার উপরে একটি লোক বসে ছিল, তাকে মারলেও হতো, কিন্তু উনি শিকারী মানুষ। এতেও শান্ত না হয়ে পরের সিনে উনি একটি ঘোড়াকে লাগাম টেনে থামান, তার পরে, তার মুখে একটি নিদারুণ ঘুষি। "ফুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে তুমি ক্রমে নরমুণ্ড লোভী হয়ে ওঠো" ( কৃষ্ণসার হরিণ ইঃ)।
ইন সামারি, এ ছবিতে শেখার অনেক কিছুই আছে। এ আসলে এক অমোঘ শ্রেণী সংগ্রামের গল্প যাতে প্রচুর উলুখাগড়া তথা ঘোড়ার প্রাণ যায়। পুরোটা লিখে উঠতে পারলুমনা। ঘুম্পায়। আপনারা অবশ্যই দেখে নেবেন।
পুনশ্চ: পুরো ছবি জুড়ে জনি লিভার কি এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলেন। ওটা আপনি প্রথমে ভাববেন কমিক রিলিফ, পরে দেখবেন, ওটা সত্যিই কমিক রিলিফ, কারণ ঐ মুহূর্ত গুলিতেই আপনি সর্বব্যাপী এক কমিকের থেকে রিলিফ পাচ্ছেন। এইভাবে দর্শকের ন্যারেটিভ ও পার্সপেক্টিভ ঘেঁটে দেওয়া হয়, যাকে বোদ্ধারা পরবর্তীকালে যথাক্রমে তারকোভস্কি ও ডয়েটভস্কির মিলিত প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যাগ্গে, এ সিনেমার প্রাণ হলো গান। এইটা মনে রাখবেন। প্রথমে কাজলের ঐ গানটা। জাতি হুম মায়, জলদি হ্যায় কেয়া। এই গানটার মতো অনবদ্য ভিসুয়ালইজেশন আজ অবধি হিন্দি সিনেমায় হয়নি। খড়ের উপরে অপ্সরা বিভঙ্গে কাজল নাচছে, শাহরুখ গাইহরিণ (কেন বাপু, সব সময় হরিণী কেন, হরিণের কি কাম থাকতে নাই?) এর মতো পাগল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ক্যামেরা জুম করে ঘোড়াদের উপরে। তারা, স্বভাবতই, কিংকর্তব্যবিমূঢ় (দর্শকও তাই অবশ্য)। এইরকম ভাবে ঘোরতর এক বুর্জোয়া সমাজে প্রলেতারিয়েতের জীবন যন্ত্রণা ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘোড়া এখানে গতি নয়, শোষণের মোটিফ। সে আবার শেষের দিকে আসবে, পরে বলছি। একটি অসাধারণ সিন আসে যেখানে কাজল শাহরুখ এর গেঞ্জির মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে নাচছেন। সেই সময় ক্যামেরা ক্ষণিকের জন্যে জুম করে ব্যাথাতুর শাহরুখের মুখে, লিপ রিডিং জানলে আপনি নিশ্চিত পড়তে পারতেন তিনি বলছেন হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে।
অতঃপর মমতা কুলকার্নির সেই অবিস্মরণীয় নাচ, রানাজী মাফ করনা গলতি মারে সে হো গৈ। গানের মাঝখানে সেই সলাজ বিনম্র উচ্চারণ, "ভুল হুই মুঝসে ক্যায়সে আচম্ভা, বহনই ভি থা পিয়া জিতনা লম্বা"। এইখানে সরল দর্শকের চোখ এড়িয়ে যায় যে মমতাদেবী হাত দিয়ে পরিষ্কার ইঙ্গিত করেন উনি লম্বা বলতে কি বলতে চেয়েছেন। ভারতীয় পৌরুষের এতো সোচ্চার উচ্চারণ আর কখনো পেয়েছেন? এর পরে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ কাহিনী পেরিয়ে আমরা প্রবেশ করি সিনেমার মূল অংশ তথা ক্যালাকেলিতে। এইখানে আবার, ফিরে আসে প্রলেতারিয়েত তথা ঘোড়া। সলমন খান প্রথমে একটা ঘোড়াকে সপাটে লাথি মারেন, মানে ঘোড়ার উপরে একটি লোক বসে ছিল, তাকে মারলেও হতো, কিন্তু উনি শিকারী মানুষ। এতেও শান্ত না হয়ে পরের সিনে উনি একটি ঘোড়াকে লাগাম টেনে থামান, তার পরে, তার মুখে একটি নিদারুণ ঘুষি। "ফুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে তুমি ক্রমে নরমুণ্ড লোভী হয়ে ওঠো" ( কৃষ্ণসার হরিণ ইঃ)।
ইন সামারি, এ ছবিতে শেখার অনেক কিছুই আছে। এ আসলে এক অমোঘ শ্রেণী সংগ্রামের গল্প যাতে প্রচুর উলুখাগড়া তথা ঘোড়ার প্রাণ যায়। পুরোটা লিখে উঠতে পারলুমনা। ঘুম্পায়। আপনারা অবশ্যই দেখে নেবেন।
পুনশ্চ: পুরো ছবি জুড়ে জনি লিভার কি এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলেন। ওটা আপনি প্রথমে ভাববেন কমিক রিলিফ, পরে দেখবেন, ওটা সত্যিই কমিক রিলিফ, কারণ ঐ মুহূর্ত গুলিতেই আপনি সর্বব্যাপী এক কমিকের থেকে রিলিফ পাচ্ছেন। এইভাবে দর্শকের ন্যারেটিভ ও পার্সপেক্টিভ ঘেঁটে দেওয়া হয়, যাকে বোদ্ধারা পরবর্তীকালে যথাক্রমে তারকোভস্কি ও ডয়েটভস্কির মিলিত প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
Friday, February 23, 2018
কোলকাতা
শুনিনি কোলকাতা ছেড়ে গেছে কেউ আর ভালো আছে
শুনিনি কখনো কেউ সুখে গেছে, কোলকাতা ছাড়িয়ে ...
সেখানে সন্ধেবেলা ধূপ ধুনো শাঁখ
রাস্তা হারিয়ে ফেলা ফেরিওয়ালা ডাক
আলতো শীতের ওম, লেপ মুড়ি শুড়ি
দেওয়া দুপুরবেলারা, কমলা লেবুর কোয়া
ছাড়ানো অলস দম্পতিরা আছে ভিক্টোরিয়া
প্রাঙ্গন জুড়ে; নোংরা ও ধ্বস্ত চরাচর
ছেয়ে আছে না রাখা কথারা, আনহোনী মায়া
শুনিনি কখনো কেউ সুখে গেছে, কোলকাতা ছাড়িয়ে ...
সেখানে সন্ধেবেলা ধূপ ধুনো শাঁখ
রাস্তা হারিয়ে ফেলা ফেরিওয়ালা ডাক
আলতো শীতের ওম, লেপ মুড়ি শুড়ি
দেওয়া দুপুরবেলারা, কমলা লেবুর কোয়া
ছাড়ানো অলস দম্পতিরা আছে ভিক্টোরিয়া
প্রাঙ্গন জুড়ে; নোংরা ও ধ্বস্ত চরাচর
ছেয়ে আছে না রাখা কথারা, আনহোনী মায়া
কখনো হলোনা ঠিকমত, কোলকাতা ছেড়ে যাওয়া
পুজো
একডালিয়ার প্যান্ডেল নেই, কলেজ স্ট্রীটের রোশনাই,
আমাদের পুজো বড় মাপামাপি, দিন আনি আর দিন খাই।
নাটকের প্রপ বড় দুর্লভ, ডিনার ও তো চাই শস্তা,
ডেকরেশন কি বাজেট ছাড়ালো? মুড়ি আনো এক বস্তা।
হলের ভাড়াটা কমানো গেলোনা, দুপুরের খাওয়া তাও ফ্রি,
গ্র্যজুএট ছানা, কি ভাবে বলুন পনেরোর বেশী চাঁদা দি?
প্রতিবারই ভাবি, এবারেই শেষ, আমরা সবাই ক্লান্ত,
তবু দিন শেষে, ফুরোয়না কিছু, সকলই থাকে বাড়ন্ত।
রাত জেগে কাজ, আড্ডা ও গান, ভালোবাসা, অভিমানে,
স্টেট কলেজের পুজো বেঁচে থাক আমাদের মনে প্রাণে।
আমাদের পুজো বড় মাপামাপি, দিন আনি আর দিন খাই।
নাটকের প্রপ বড় দুর্লভ, ডিনার ও তো চাই শস্তা,
ডেকরেশন কি বাজেট ছাড়ালো? মুড়ি আনো এক বস্তা।
হলের ভাড়াটা কমানো গেলোনা, দুপুরের খাওয়া তাও ফ্রি,
গ্র্যজুএট ছানা, কি ভাবে বলুন পনেরোর বেশী চাঁদা দি?
প্রতিবারই ভাবি, এবারেই শেষ, আমরা সবাই ক্লান্ত,
তবু দিন শেষে, ফুরোয়না কিছু, সকলই থাকে বাড়ন্ত।
রাত জেগে কাজ, আড্ডা ও গান, ভালোবাসা, অভিমানে,
স্টেট কলেজের পুজো বেঁচে থাক আমাদের মনে প্রাণে।
আগেকার কবিতা
সে ভীষণ মন কেমনিয়া মেঘ
এসেছিল আকাশের কোণে
বালিকা নাকছাবি তার
ভুলে এলো হলুদের বনে
এসেছিল আকাশের কোণে
বালিকা নাকছাবি তার
ভুলে এলো হলুদের বনে
বালিকার তনু মন জুড়ে
ছেয়ে আছে গভীর বিষাদ
অঙ্ক মেলেনি কিছু আজ
ওই এক ছিল পরমাদ
ছেয়ে আছে গভীর বিষাদ
অঙ্ক মেলেনি কিছু আজ
ওই এক ছিল পরমাদ
ধুপ ধূনো দেয় অভ্যাসে
বালিকা, তুলসী মঞ্চটি সুখী গৃহকোণে
মনোরম গৃহপাট রয়েছে সকলি
বৃথা সরসী শুকালো আজ নিদাঘ তপনে
বালিকা, তুলসী মঞ্চটি সুখী গৃহকোণে
মনোরম গৃহপাট রয়েছে সকলি
বৃথা সরসী শুকালো আজ নিদাঘ তপনে
গৃহে তার ধনধান্য, তার সাজানো বাগানে
ফুটেছে মল্লিকা, কোকিলেরা কুহু ডাকে
তবু আহির ভৈরবী মাঝে বাজে ছায়ানট
বালিকার প্রিয়জন পরবাসে থাকে
ফুটেছে মল্লিকা, কোকিলেরা কুহু ডাকে
তবু আহির ভৈরবী মাঝে বাজে ছায়ানট
বালিকার প্রিয়জন পরবাসে থাকে
Subscribe to:
Posts (Atom)